চট্টগ্রাম ব্যুরোঃ উত্তাল পদ্মাকে পোষ মানানো স্বপ্নের পদ্মা সেতু শুধুমাত্র একটি স্টিল ও কংক্রিটের ৪১টি পিলার এবং ৪২টি স্পেনের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বিতল বহুমুখী সেতু নয়। এতে জড়িয়ে রয়েছে ষোলো কোটি কৃষক, শ্রমিক ও রেমিট্যান্স যোদ্ধার ঘাম এবং বাঁধভাঙা উচ্ছাস। প্রমত্তা পদ্মার উত্তাল ঢেউয়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে বৃদ্ধ পিতা-মাতা, সন্তানসহ স্বজন হাড়ানোর কত না হাহাকার ও আত্মাহুতির গল্প। আজ এই মাহেন্দ্র ক্ষণে দক্ষিণ-পঞ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা শুধু নয়, বাংলার ৬৪ জেলার ১৬ কোটি বাঙালির হৃদয়ে মেলবন্ধনের উৎসব ‘পদ্মা সেতু’র এ শুভ উদ্বোধন।
আজ পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে ৬৪ জেলার ন্যায় চট্টগ্রাম প্রান্তে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসন, সামরিক কর্মকর্তা ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, সরকারি বেসরকারি দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, সাংস্কৃতিক কর্মী, নানা পেশার মানুষ বর্ণিল এ আয়োজন উপভোগ করেন।
পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বিশে^র ইতিহাসে স্থান করে নেওয়া বাঙালির আত্ম-প্রত্যায়ের, আত্ম-প্রকাশের, আত্ম-মর্যাদার, আত্ম-সক্ষমতার একটি চিরঞ্জীব মহাকাব্য।
শুধু জিমনেসিয়ামে নয়-নগরীর বেশ কয়েকটি স্থানে বড় পর্দায় উদ্ধোধন অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর ব্যবস্থা করেছে বেশ কয়েকটি স্থানে। নগরীর আগ্রাবাদের অফিস পাড়া ঘুরে দেখা গেছে গতকাল থেকে-এখানকার সরকারি কার্য ভবন-১, সরকারি কার্য ভবন-২, আগ্রাবাদ সার্কেলের এসিল্যান্ড অফিস, সড়ক ভবন, বিএসটিআই ভবনসহ সরকারি সব ভবনে ঝলমলে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যায় এ উপলক্ষ্যে কনসার্টেসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতশবাজি ব্যবস্থা করা হয়েছে-যা সকলের জন্য উম্মুক্ত।
সকাল সাড়ে আটটায় চট্টগ্রাম প্রান্তে উদ্ধোধন অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয় নগরীর জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গনে। সরাসরি সব অনুষ্ঠান বড় পর্দায় উপভোগ করেছে চট্টগ্রামের মানুষ সাক্ষী হয়েছে নতুন ইতিহাসের। উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক। এছাড়া সরকারের সব দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ সকল শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।